বন্ধুরা যখন এক জায়গায় হই তখন অনেকে অনেক গল্প বলে। চকরির গল্প , গার্লফ্রেন্ড এর গল্প । আরো কত কি। এক ধরণের মানুষ আছে যারা গল্প করতে করতে কি বলে অনেক সময় নিজেরাও জানেনা। আবার কিছু মানুষ আছে তার সামনে কোন ঘটনা বললেই সে সেই ঘটনার সাথে মিল রেখে আরেকটি গল্প বলবে। যদি সেই ঘটনা হয় ভয়ের তবে সে আরেকটু ভয়ের আর যদি সেটা হয় হাসির তবে সে আরেকটু বেশি হাসির গল্প বলবে।
এমনিতে আমরা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সবাই মিথ্যা বলি । সুযোগ পেলেই বলি , বিপদে পড়লেও বলি । কিন্তু বিপত্তি বাধে তখন যখন মিথ্যাবাদী মিথ্যা বলে সত্য মনে করে। ভূত এফ এম এর গল্প আমরা কম বেশি সবাই শুনেছি। অনেক গল্প আমাদের কাছে মনে হয়েছে অসম্ভব অথচ যে বলছে সে গড়গড় করে বলে যাচ্ছে।
মিথোম্যানিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি গল্প করার জন্য নিজে নিজেই চরিত্র সাজাতে পারে এবং সেই চরিত্র নিয়ে নানা রকম গল্প বলতে পারে । এবং মজার বিষয় হচ্ছে সে নিজেও সত্য মনে করেই গল্প বলে। সে নিজেও বিশ্বাস করেনা এটা কোন মিথ্যা ঘটনা। একই মিথ্যা ঘটনা সে নানা জায়গায় বলতে পারে আবার একটা ঘটনাকে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে বলতে পারে।
মিথোম্যানিয়ায় আক্রান্ত রোগী দেখে বোঝার উপায় নেই। কারণ যখন কেউ নিজে বিশ্বাস করে এটা সত্য ঘটনা তার মুখের ছাপ বা বাচনভঙ্গি দেখে বোঝা যাবেনা যে সে মিথ্যা বলছে।
একটি বাস্তবচিত্র দেখানো যাক। আমাদের মায়েরা, বোনেরা যখন গল্প শুরু করে তখন কি করে ? ধরা যাক কেউ একজন বললো ” আমার ছেলের খুব জ্বর আসে” হুট করে পাশ থেকে আরেকজন বলবে ” আপনার ছেলের আর কি জ্বর আসে? আমার ছেলের জ্বর এতো বেশি উঠে যে , ব্লা ব্লা ব্লা । আবার কেউ যদি বলে আমার মেয়ে খুবই ভালো । হুট করে পাশের জন তার নিজের মেয়ে সম্পর্কে ভালো কিছু বলতে আরম্ভ করবে। মিথোম্যানিয়া শুরু হয় এখান থেকেই।

নিজেদের বন্ধুদের মধ্যে এমন অনেককে পাবেন যে কোন কারণ ছাড়াই মিথ্যা বলে। বানিয়ে বানিয়ে বিভিন্ন গল্প বলে। তার কোন সেলিব্রেটির সাথে কথা হয় । তাকে তারা খুব ভালোবাসে , খেতে দেয়। নানা রকম রঙ্গিন গল্প।
মিথোম্যানিয়া রোগের চিকিৎসাও বেশ কঠিন। কারণ মিথোম্যানিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা তাদের বলা মিথ্যাগুলোকে মিথ্যা বলে ভাবেই না। তাই তারা এর চিকিৎসার দিকেও ঝুঁকে না।