গুগল সার্চ ইঞ্জিন অ্যান্ড্রয়েডে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের ‘ডিফল্ট’ সুবিধা দেবে, তবে অর্থের বিনিময়ে!
অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেড মালিকানাধীন টেক জায়ান্ট গুগল , এখন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে ইউরোপের নতুন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে প্রতিযোগিতা করার অনুমতি দেবে! তবে তাদের এই অধিকারের জন্য অর্থ গুণতে হবে গুগলের কাছে।
অ্যান্ড্রয়েড ও নোটবুকগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে ব্লক করে, ক্রোম ব্রাউজার ও সার্চ অ্যাপ প্রি-ইন্সটল করায় গত বছর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন গুগলকে ৪.৮১ বিলিয়ন বা ৪৮১ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করেছিল! এর এক বছর পরেই এই ঘোষণাটি দিলো আমেরিকান টেক জায়ান্ট গুগল।
এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন গুগলকে তখন নির্দেশ দিয়েছিল, প্রতিযোগিতা বিরোধী (যেমন: অন্য সার্চ ইঞ্জিনকে ব্লক করা, ব্যবহারকারীকে ক্রোম ব্রাউজার, গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারে বাধ্য করা) কর্মকান্ড বন্ধ করতে অথবা জরিমানা হিসেবে অ্যালফাবেট কোম্পানির সারা বিশ্বে দৈনিক আয়ের ৫% করে দিতে।
গুগল একটি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে যে, ২০২০ সালের শুরুর দিক থেকে ইউরোপের ব্যবহারকারীরা যখন একটা নতুন স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট সেট করবে, তখন গুগল সহ চারটি অপশন থেকে একটি ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন বেছে নিতে সক্ষম হবে।
এই অপশনে গুগলের সাথে যে প্রতিদ্বন্দ্বী সার্চ ইঞ্জিনগুলো থাকবে, তারা কিন্তু ফ্রিতে স্থান পাবে না! গুগলকে অর্থ দিয়েই জায়গাটা পেতে হবে! এক্ষেত্রে, প্রতিদ্বন্দ্বী সার্চ ইঞ্জিনগুলো প্রতিটি পৃথক দেশের জন্য, পৃথক নিলামের চারটি বিকল্পের মধ্যে গুগলে যোগদানের জন্য আবেদন করতে পারবে অর্থের বিনিময়ে।
গুগলের কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী এই পরিকল্পনাটি ভালোভাবে গ্রহণ করেনি! অবশ্য এর মাধ্যমে গুগল হয়তো এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছে! এক দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদেশ মানা, অপর দিকে মুনাফা বাড়ানোর নতুন ক্ষেত্র তৈরী করা!
সারা বিশ্বে গাছ লাগানোর জন্য নিজেদের ৮০% মুনাফা চ্যারিটিতে দান করা সার্চ ইঞ্জিন ‘ইকোশিয়া’ থেকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা যদি নিলামে প্রবেশ করা এবং অ্যান্ড্রয়েডে সার্চ ইঞ্জিন বিকল্প হওয়ার সুযোগের জন্য গুগলকে অর্থ প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিই, তবে এটি সম্ভবত লক্ষ লক্ষ গাছের ব্যয় হবে যা আমরা অন্যথায় রোপণ করতে পারতাম!’ অন্যদিকে, চেক সার্চ ইঞ্জিন ‘সেজনাম’ বলেছে, ‘এর কী কী প্রভাব পড়বে তা এখনো পরিষ্কার নয়।’
জার্মান সার্চ ইঞ্জিন ক্লাইকজ এই প্রস্তাবনার সমালোচনা করে বলেছেন, ‘কিছু সংস্থা গভীর পকেট নিয়ে প্রতিযোগীদের কাছে হেরে যেতে পারে।’ ক্লাইকজেজের প্রধান নির্বাহী মার্ক আল-হেমস আরও বলেন, ‘নিলামে যদি সর্বোচ্চ অর্থদাতা জিতে এবং অন্যদিকে যদি সবচেয়ে সেরা সার্চ ইঞ্জিন হেরে যায়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবহারকারীরাই!’
অবশ্য এই বিষয়ে গুগলের ভিন্নমত। তারা নিলাম প্রক্রিয়াটিকে, ব্যবহারকারীদের জন্য সার্চ ইঞ্জিনকে অপশন হিসেবে দিতে ‘সুষ্ঠ ও উদ্দেশ্য পদ্ধতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। এদিকে ইউরোপীয় কমিশন প্রক্রিয়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের পরিকল্পনা করেছে!
যাইহোক, প্রক্রিয়াটি সফল বাস্তবায়ন হলে গুগলের মুনাফার পরিমাণ যে আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই!
আরও পড়ুন: আপনার হুয়াওয়ে স্মার্টফোন একেবারেই অযোগ্য মনে করছেন?