বিশ্বজুড়ে বাড়ছে গরমের দাবদাহ। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলস্বরূপ ক্রমশ বেড়ে চলা এ তাপমাত্রার কারণে গ্রীষ্মকাল গুলোতে রীতিমতো অসহনীয় গরম পড়ছে। আর এ তাপমাত্রা অ্যাথলেটদের বড় মাথাব্যাথার কারণ। গরমের কারণে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ২০১৪ বিশ্বকাপে বেশ কটি ম্যাচে দুই অর্ধের মাঝামাঝি সময়েই দিতে হয়েছিল পানি বিরতি। যাতে নষ্ট হয়েছে খেলার সৌন্দর্য। গরমের প্রস্তুতি হিসেবেই তৈরী করা হয়েছে এই বিশেষ পোষাক।
আগামী বছর টোকিও তে বসবে বিশ্ব ক্রীড়ার সবচেয়ে বড় আসর ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিক। আবহাওয়াবিদগণ জানাচ্ছেন, গ্রীষ্মকালীন এ অলিম্পিক চলাকালে জাপানে তখনকার তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এরও বেশি দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে ব্রাজিল বিশ্বকাপের মতই পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে আবারো।
এছাড়াও ২০২২ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে বসবে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। সেসময় কাতারে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর আশপাশেই থাকবে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিসগুলো।
তীব্র গরমের সাথে লড়তে অ্যাথলেটদেরা তাই তারা শরীর ঠান্ডারাখার নানান কলাকৌশল অবলম্বন করবেন এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার।
জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিরোশি হাসেগাওয়া বলেন,” মানব শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুলেই ঘটে বিপত্তি। তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ঘাম ঝরার হার বাড়ে। ফলে পানিশূন্যতা, কর্মদক্ষতা হ্রাস আর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার মত সমস্যাগুলো মাথাচাড়া দেবে”
সমস্যা সমাধানে জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকবৃন্দ দিচ্ছেন এ অভিনব সমাধান। তাঁরা জাপানি ক্রীড়াপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘মিজুনো’ এর সাথে যুক্ত হয়ে উদ্ভাবন করে নতুন ধরণের পোষাক। যা তীব্র গরমে অ্যাথলেটদের এনে দিতে পারে স্বস্তি। আইস প্যাকের সমন্বয়ে বিশেষভাবে তৈরি হওয়া এ পোষাকে আছে কলার। যা শরীরকে গরমে দেবে আরাম। গরমকে কাবু করতে মোক্ষম অস্ত্রও বলছেন একে।
পোষাক প্রস্তুতের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে গবেষকগণ বলছেন অ্যাথলেটদের শরীরের তাপমাত্রা অনুকূলে রাখা। হৃৎকম্পন বেড়ে যাওয়াকে প্রতিরোধ করার পাশাপাশি ত্বক শীতল রেখে অ্যাথলেটদের স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য।
অধ্যাপক হাসেগাওয়া ইতিমধ্যে হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল টিমের উপর পোষাকটির নিরীক্ষা চালিয়েছেন বলে জানান। পোষাক পরিধান করে খেলা ফুটবলার আর না পরে খেলা ফুটবলার দের মধ্যেও দেখা গেছে বেশ তফাৎ।
পোষাক পরিধান কারী খেলোয়াড়েরা অপেক্ষাকৃত অধিক উদ্যমী হয়ে খেলতে দেখা গেছে। পাশাপাশি খেলোয়াড়েরা এর ব্যবহার তাদের স্বস্তি দিয়েছে বলেও জানিয়েছে। এই পোষাক যে কেবল খেলোয়াড়েরাই ব্যবহার করতে পারবে তা না বরং সাধারণ মানুষজনের উপযোগী হবে বলে জানিয়েছেন এই অধ্যাপক।
তিনি আরো জানিয়েছেন ভবিষ্যৎ এই প্রযুক্তি শারীরিকভাবে অধিক তাপমাত্রায় সমস্যায় ভোগা লোকজনের উপযোগী করে তৈরি করার কাজে গবেষণা করা হবে।