বিশ্বের সবকিছুতে প্রযুক্তি যখন হুড় হুড় করে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনো চিকিৎসা বিজ্ঞান ক্যান্সারের কাছে হার মেনে যাচ্ছে। চিকিৎসা শাস্ত্রে বিজ্ঞানের অবদান নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয় বরং বহু বহু গুণে সহজ করে তুলেছে। আধুনিক যন্ত্রাংশ থেকে আমরা যে সুবিধা ভোগ করছি তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু ক্যান্সার নামক মরণব্যাধিকে এখনো হারাতে পারেনি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার ও মানুষের মধ্যে চলছে যুদ্ধ; গবেষকরা নিরন্তর গবেষণা করে চলেছে ক্যান্সার নিয়ে- কীভাবে ক্যান্সারকে থামানো যায়! এই ক্যান্সার গবেষণায় থেমে নেই বাংলাদেশের গবেষকরাও।
সম্প্রতি সিলেটে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যান্সার গবেষণা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি চমকপ্রদ উদ্ভাবন করেছে। এই দলের নেতৃত্বে আছেন শাবিপ্রবির অধ্যাপক ইয়াসমিন হক। তিনি এবং তার দল মিলে ননলাইনার অপটিক মেথডে কাজ করা একটি ক্যান্সার ডিটেকশন কিট আবিষ্কার করেছে যার মাধ্যমে খুব সহজে এবং সবচেয়ে কম খরচে শনাক্ত করা যাবে ক্যান্সার। এই ডিটেকশন কিট দিয়ে পরীক্ষা করতে মানুষের রক্তের নমুনা লাগে। আর নমুনা বিশ্লেষণ করা হয় লেজার বিমের সাহায্যে! এই ডিটেকশন কিট দিয়ে রক্ত পরীক্ষা করতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট। আর এই পরীক্ষার জন্য একজন রোগীর খরচ হবে খুব বেশি হলে ৫০০ টাকা।
ক্যান্সার শনাক্তকরণে এর চেয়ে কম খরচের আর কোনো উপায় চিকিৎসা বিজ্ঞানে নেই। তা ছাড়া বর্তমানে সেসব ক্যান্সার শনাক্তকরণ পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো শুরুর পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারে না! আর যখন শনাক্ত করা যায় তখন অনেক দেরী হয়ে যায় চিকিৎসার শুরু করার জন্য। কিন্তু এই ডিটেকশন কিট প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সারও শনাক্ত করতে সক্ষম হবে, ফলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়! ইতিমধ্যে এই গবেষণাটির জন্য ‘Technique and framework based nonlinear optical normal for body liquid for finding on neoplasia’ নামে বাংলাদেশ ও আমেরিকায় পেটেন্ট আবেদন করা হয়েছে! শীঘ্রই পেটেন্ট অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে!
মেডিকেল রিসার্চ সেক্টরে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় মাইলফলক। গবেষণা চলতে থাকলে হয়তো আরও বড় কিছু আসবে বাংলাদেশের সফলতার ঝুলিতে। ক্যান্সার গবেষণায় এই অসামান্য অবদান রাখায়, বিজ্ঞান নিউজের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ইয়াসমিন হক এবং তার দলকে অভিনন্দন।
সোর্স: Get Bengal
আরও পড়ুন: ওয়েবসাইটের ডোমেইন ও হোস্টিং কী? এগুলো কেন দরকার?